ভ্রমন: বিনা ভিসায় ভারতে বনভোজন - omar360. বাংলাদেশের সকল শিক্ষণীয় বিষয় এর সমাহার

Header Ads

ভ্রমন: বিনা ভিসায় ভারতে বনভোজন

শহীদ তিতুমীর

স্কুলের নাম শহীদ তিতুমীর আইডিয়াল একাডেমী। ৭ম শ্রেণী কয়েকজন স্নেহভাজন ছাত্রদের সাথে কথা বলছেন ফরহাদ স্যার। ভারতে বনভোজন করতে নিয়ে যাবেন তিনি। সবাই খুব আগ্রহ ‍নিয়ে কথাগুলো শুনতেছে। ফরহাদ স্যার খুব মজার মানুষ আর ভ্রমণ পিপাসু। খুব সহজেই আপন করে নেওয়ার মতো অসাধারণ গুন আছে তার। আর সামনে যারা আছে তারাও কম নয়। একজন অন্যজন থেকে প্রতিভাবান। খোকনকে হইতো কেউই কখনই ভুলতে পারবেনা তার অসাধারণ আনন্দ দেওয়ার ক্ষমতার জন্য। যাই হোক।
শহীদ তিতুমীর
শহীদ তিতুমীর

শেষ পর্যন্ত বনভোজনের জন্য সবাই তৈরি । আতিক, খোকন, মেহেদী, তুষার, বিনসাউদ, বিজয়, রাসেল সহ মোট ১২ জনের টিম। স্যার সময় বেধে ‍দিলেন সকাল ৭ টায় ।সবাই ৬:৩০ এ তিতুমীর মাঠে। সাইকেল আর কাধেঁ একটা ব্যাগ। ব্যাগে থাকবে একটা চাকু আর খাবার । সবই স্যার এর পরিকল্পনা মাফিক হয়েছে। চাকু প্রয়োজন হতে পারে যেহেতু পাহারি রাস্তা পারি দিতে হবে। ঠিক ৭টায় রওনা দিলাম সবাই। সবার মনে চাপা উত্তেজনা। আজ ভারতে যাব। যাবার পথে একটা হোটেল থেকে খাবার নিয়ে নিলাম সবাই। প্রায় ১:৩০ মিনিট পর আমরা লাউচাপড়া পিকনিক স্পটে আসলাম। সবাই একটু বিশ্রাম নিলাম সবাই। হালকা নাস্তা করে নিলাম সবাই। এর পর সাইকেল রেখে শুরু হলো হাটাঁ পথ। স্যার আগে চললেন পথ দেখিয়ে। এর আগে কয়েকবার গেছেন স্যার। পথটা উনার চেনা। খুব মজা করেই যাচ্ছিলাম। বিশেষ করে খোকনের দুষ্টামী ভ্রমনটাকে জীবন্তরুপ দিয়েছে। বিনসাউদের চেহারা নিয়ে মজা করছে সবাই। স্বাস্থটা একটু কম হওয়ায় সবাই বলছে সে মাঝে পথে চলে আসবে। বেচারা। কিছুদুর যাবার পর সবার আনন্দ কমতে থাকলো। যে পথ দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি মনে হচ্ছে গত ৫ বছরেও কেউ আসেনি এই দিকে। নতুন রাস্তা তৈরি করে এগুতে হচ্ছে। প্রায় ঘন্টা খানিক চলার পর হঠাৎ বড় একটা খাতের সামনে এসে পরলাম। স্যার ভালো করে চারপাশে দেখলেন। কিছুক্ষন দেখার পর উনি বললেন আমরা ভুল পথে এসেছি। আবার অন্য পথে চলা শুরু করলাম সবাই। এই পথ আরো কঠিন। এগুনোই কঠিন হয়ে গেলো। প্রায় ১:৩০ মিনিট চলার পর সামনে কিছু ঘর দেখা মিলল। স্যার খুশিতে হাসলেন।তার মানে বুঝলাম আমরা সঠিক যায়গায় এসেছি। আমাদেরকে দেখে ঐ ঘরগুলোতে বসবাস কারিরা এমন ভাবে আমাদের দিকে তাকাচ্ছে, মনে হচ্ছে আজব কোন প্রাণী দেখতেছে। আসলে তারা যুগের সাথে তাল মিলাতে পারেনি। তাদের চলাফেরা সব কিছুই আদিম যুগের মতো। যাই হোক আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে দেখে একজন এগিয়ে আসলেন। আমাদের বাধা দিলেন সামনের দিকে না যেতে। সামনেই ভারতের সিমান্ত তাই তিনি যেতে বাধা দিচ্ছেন। স্যার সামনে এগিয়ে গিয়ে কথা বল্লেন। স্যার উনাকে বুঝালেন আমরা জেনে শুনেই যচ্ছি। অনেক কিছু বলে বুঝালেন উনাকে। আবার শুরু হলো যাত্রা। এর মধ্যে সবার অবস্তা খারাপ। পা বেথা শুরু হয়েছে। খুদায় পেট চুঁ চুঁ করছে। মনে হচ্ছে এখনি ব্যাগ থেকে খাবার গুলো বের করে খেয়ে ফেলি। কিন্তু খাবার কথাতো ভারতে গিয়ে। আমি হাটছি আর ভাবছি আরো কতো দুর... ৩০ মিনিট চলার পর সামনে একটি পিলার দেখতে পেলাম। স্যার খুশিতে বলে উঠলেন আমরা সিমানায় পৌছে গেছি। আমরা সবাই খুশি হলাম। স্যার সবাইকে বসতে বল্লেন। সবাই বসলাম। স্যার বল্লেন কিছুদূর পরপর ভারতের সেনাবাহীনির পাহারাদার আছে। সবাইকে সাবধানে পা বাড়াতে হবে। সবাই আস্তে আস্তে চলতে শুরু করলাম। কিছুদুর যাবার পর রাসেল বলল, স্যার দেখেন বিএসএফ। সবাই তাকালাম সেদিকে। দেখলাম একটা পর্যবেক্ষণ কক্ষ থেকে দূরবীন দিয়ে এদিক ওদিকে তাকাচ্ছে। স্যার সবাইকে বসতে বলল । আমরা সবাই বসলাম। বসে বসে কিছুদুর গেলাম। একটা খুলামেলা জায়গার মতো জায়গায় এসে সবাই বসলাম। এবার সবাই খাওয়া শুরু করলাম। খাওয়া শেষে সবাই খাবার কার্টুনে অনেক কিছু লিখে গাছের সাথে টানিয়ে দিলাম। এই মুহুর্তে সবাই কষ্টটা ভুলে গেলাম। আমাদের মিশন সফল হয়েছে। 

খুব মনে পরে সবাইকে। মনে হয় যদি সেই আগের দিনগুলোতে ফিরে যেতে পারতারম। তুষার মামা তুকে অনেক মনে পরে। অনেক। খুকন, আতিক মেহেদী  সবাইকে আবার আগের মতো কাছে পেতে ইচ্ছা করে । বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন রাতের কথা মনে আছে তোমাদের?? মনে না থাকলে মনে করিয়ে দিবো ইনশাআল্লাহ...।

তোদের বন্ধু







No comments

Powered by Blogger.